শীতের শুরুতে বাজারে চলে এসেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জের জনপ্রিয় প্রসিদ্ধ সবজি ' গোয়ালগাদ্দা উরি' শিম। সিলেটে সবজিটির চাহিদা এবং কদর খুব বেশি,ক্রেতারা চড়াদামে ক্রয় করছেন এই শিম।সিলেটের
গোলাপগঞ্জ উপজেলার পুরকায়স্থ বাজার থেকে এই শিম চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।কেবল দেশেই নয়, বিদেশে মাটিতে যাচ্ছে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় চাষকৃত ‘গোয়ালগাদ্দা উরি ’ স্থানীয় নামের এই শিম।
সিলেট অঞ্চলে চাষ হয় ‘গোয়ালগাদ্দা উরি’ নামের এই বিশেষ জাতের শিমটি বেশি চাষ হয়ে থাকে গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ ও লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে। ঢাকাদক্ষিণের পুরকায়স্থ বাজার ও লক্ষণাবন্দের চৌধুরী বাজারে সপ্তাহে চার দিন শিমের হাট বসে। এসব বাজার থেকে পাইকারদের হাত ঘুরে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
পুরকায়স্থ বাজারে তিনজন পাইকারি ক্রেতা ও দুইজন শিমচাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকাদক্ষিণ ও লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বেশকয়টি গ্রামে 'গোয়ালগাদ্দা উরি' শিমের বেশি চাষ হয়। ইউনিয়নের চাষিরা চার থেকে পাঁচ বিঘা জমিতে শিমের চাষ করেন। সেখান থেকে প্রতি সপ্তাহে ৪০০ থেকে ৬০০ কেজি শিম বিক্রি হয়। শীত কালিন এই শীম সবজিটি স্বাদের সেজন্য খাদ্য তালিকায় এটি সবার প্রিয়। বাজারে পাইকারি ক্রেতা কৃষকদের কাছ থেকে শিম সংগ্রহ করে সিলেটের সবজি বাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যান। সপ্তাহে চার দিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা ভিড় করেন। সিলেটের বাজারগুলোয় এ শিম কেজিতে ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায় এ বছর উপজেলার ৭০০ হেক্টর জমিতে গোয়ালগাদ্দা উরি নামের শিমের চাষ হয়েছে। উপজেলায় শতাধিক শিমের চাষি রয়েছেন। এর মধ্যে ৮০ জন কৃষক ঢাকার ভেজিটেবল অ্যান্ড ফুডস এক্সপোর্ট নামের একটি সংগঠনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকেন। তাঁরা উন্নত মানের বাছাই করা শিম কৃষকদের কাছ থেকে কিনে যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে থাকেন। সংগঠনটির মাধ্যমে দেশের বাইরে প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ কেজি শীম রপ্তানি করা হবে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আট থেকে দশ ইঞ্চি লম্বা ও দুই থেকে তিন ইঞ্চি প্রস্থের এই শিম স্থানীয়ভাবে ব্যাপক জনপ্রিয় ও সুস্বাদু। অন্য যেকোনো শিম থেকে এর চাহিদাও বেশি।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান জানান, এই শিম এক সময় শীতের ফসল ছিল। কিন্তু এখন সব মৌসুমেই চাষ সম্ভব। সারা বছর চাষ উপযোগী সিকৃবি শিম-১, সিকৃবি শিম-২, বারি শিম-১, গোয়ালগাদ্দা শিম ও বরবটির জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।